আজকের অনুষ্ঠানে চীনের তাইওয়ানের একজন বিখ্যাত গায়িকা ও অভিনেত্রীর সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম সিয়ে চিন ইয়ান। তিনি তাইওয়ানের ‘ইলেকট্রনিক সংগীতের রানী’ হিসেবে পরিচিত এবং অনেক বছর ধরে তাইওয়ানের সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়িকা হয়ে আছেন। তার পারফরমেন্স অনেকবার তাইওয়ানে রেটিং চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে। তিনি গুরুতর গাড়ি দুর্ঘটনা থেকে অলৌকিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তার লেগে থাকার চেতনা ও ইতিবাচক মনোভাব অনেক মানুষকে উত্সাহিত করেছে। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে তার কিছু সুন্দর গান শুনবো। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুনুন সিয়ে চিন ইয়ানের একটি সুন্দর গান ‘পেং পা’।

সিয়ে চিন ইয়ান ১৯৭৪ সালে তাইওয়ানের কাওসিয়ং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯০ সালে তিনি একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং চ্যাম্পিয়ন হন। এভাবে তিনি শোবিজ জগতে প্রবেশ করেন। একই বছর তিনি টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন, প্রথমে অভিনেত্রী হিসেবে সবার সামনে হাজির হন। তার শোবিজ ক্যারিয়ার মাত্র শুরু হওয়ার এক বছর পর সিয়ে চিন ইয়ান গুরুতর গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েন। তিনি প্রায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যান। দুই বছরে কঠোর চিকিত্সার পর সিয়ে চিন ইয়ান অলৌকিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন। ১৯৯৩ সালে তিনি তার প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ করে গায়িকা হিসেবে আবার সবার সামনে হাজির হন। বন্ধুরা, এখন শুনুন তার একটি সুন্দর গান ‘প্রেম’।

তাইওয়ানে প্রথম দফা ইলেকট্রনিক গান গাওয়ার গায়িকা হিসেবে সিয়ে চিন ইয়ান অন্যান্য গায়ক গায়িকার মত পাশ্চাত্য শৈলীর ইলেকট্রনিক গান গান- তা নয়, বরং ইলেকট্রনিক সংগীত ও তাইওয়ানের স্থানীয় সংগীত ও ভাষার মিশ্রণ করেন। ১৯৯৬ সালে তার তাইওয়ানিজ ভাষার অ্যালবাম ‘চাচা নাচ’ মুক্তির পরই বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই অ্যালবামে প্রধান গান ‘চাচা নাচ’ তার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রতিনিধিত্বকারী গানে পরিণত হয়। বন্ধুরা, এখন আমরা একসঙ্গে শুনবো সিয়ে চিন ইয়ানের জনপ্রিয় গান ‘চাচা নাচ’।

সিয়ে চিন ইয়ানের তাইওয়ানিজ ভাষার ইলেকট্রনিক গান তাইওয়ান সংগীত মহলে নতুন সংগীত প্রবণতা সৃষ্টি করেছে। কেউ তাকে অতিক্রম করতে পারছে না! একই সঙ্গে তার পপ, ডান্স, ব্যালাডসহ বিভিন্ন শৈলীর গানও অনেক জনপ্রিয়। বন্ধুরা, এখন আমরা একসঙ্গে শুনবো সিয়ে চিন ইয়ান ও তাইওয়ানের অন্য একজন জনপ্রিয় গায়ক ইয়াং চো সিয়ানের সঙ্গে গাওয়া একটি সুন্দর তাইওয়ানিজ গান ‘আমার প্রিয়’।

২০০২ সাল থেকে সিয়ে চিন ইয়ান পুনরায় টিভি নাটকে অভিনয় শুরু করেন। তার অভিনীত টিভি নাটক ‘অবিস্মরণীয়’ তাইওয়ান এবং চীনের মূলভূখণ্ডে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তার শোবিজ ক্যারিয়ারও নতুন অধ্যায় শুরু হয়। অভিনেত্রী হিসেবে সারা চীনে জনপ্রিয় হলেও সিয়ে চিন ইয়ান গান গাওয়া আরো পছন্দ করেন। ২০০৬ সালের পর তিনি তার সব শক্তি গানের ক্যারিয়ারে লাগিয়েছেন। বন্ধুরা, এখন শুনুন সিয়ে চিন সিয়ের একটি সুন্দর গান ‘হাসিমুখে বিশ্বকে দেখা’।

২০০৭ সালে সি চিন ইয়ান নতুন অ্যালবাম প্রকাশ করেন, এতে প্রথমবারের মত হিপ-হপ ও তাইওয়ানিজ ভাষা সংযুক্ত করেন এবং ভালো সাড়া পান। এজন্য তিনি তাইওয়ান গোল্ডেন সুর অ্যাওয়ার্ডের শ্রেষ্ঠ তাইওয়ানিজ গায়িকার পুরস্কার পান। শুধু তাইওয়ানিজ গানই নয়, সিয়ে চিন ইয়ান ক্যান্টোনিজ, ম্যান্ডারিন এবং ইংরেজি গানও গান। ২০১৩ সালে তিনি ম্যান্ডারিন গান ‘বড় বোন’ প্রকাশ করেন। গানটি ইউটিউবে দ্রুততম ১০ মিলিয়ন ক্লিক ছাড়িয়ে যাওয়া তাইওয়ানিজ শিল্পীর গান হয় এবং তার নতুন প্রতিনিধিত্বকারি গানে পরিণত হয়। বন্ধুরা, এখন একসঙ্গে শুনবো বেশ জনপ্রিয় এই গান- ‘বড় বোন’।

এখন ৫০ বছর বয়স হলেও সিয়ে চিন ইয়ান অব্যাহত নতুন নতুন গান প্রকাশ করছেন। তার পুরানো ও নতুন গান সবই জনপ্রিয়। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা একসঙ্গে সিয়ে চিন ইয়ানের আরেকটি সুন্দর গান ‘তাকে ভালোবাসা উচিত নয়’ শুনবো। আশা করি, আপনারা তার গানগুলো পছন্দ করবেন।

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়ান।