জুলাই ৪, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশের যমুনা নদীর অববাহিকায় নির্মাণ করা হয়েছে ৬৮ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাংলাদেশ ও চীনের দুটি কোম্পানির যৌথ অর্থায়নে নির্মিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত রোববার থেকে উৎপাদন শুর করেছে।

বাংলাদেশের নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডাব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।

“সিরাজগঞ্জ ৬৮ মেগাওয়াট সোলার পার্ক” নামে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৮৮০ কোটি টাকা। এটি সিরাজগঞ্জ জেলার সয়দাবাদ অঞ্চলে অবস্থিত। ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। যৌথ অর্থায়নে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৫০ শতাংশ মালিকানায় রয়েছে নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং বাকি অর্ধেক মালিকানা চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি)।

এ প্রকল্পে ইপিসি ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চীনা কনসোর্টিয়াম অব প্যারিওশেন-ফেডি-সিনোহাইড্রো। সংস্থাটির সঙ্গে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চুক্তি সই হয়। কারিগরি পরামর্শক হিসেবে রয়েছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান জেডটেনকো লিমিটেড।

উৎপাদনের শুরুতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৮ থেকে ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি) ডেপুটি ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, যমুনাপাড়ের অব্যবহৃত কৃষিজমির মধ্যে বাংলাদেশ ও চীনের দুটি কোম্পানি বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ২১৪ একর জমি ২৫ বছর মেয়াদে লিজ নেয়। এরপর ৯ জানুয়ারি ২০২৩ এ বিদ্যুৎকেন্দ্রেটির পিপিএ (পাওয়ার পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট) এবং আইএ (ইমপ্লিমেন্টেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়। ৯ জুলাই ২০২৪ প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও আমরা ৩০ জুন থেকেই উৎপাদন শুরু করেছি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৮ থেকে ১৭ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, যেটা জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে। মিনিমাম ৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেই বাণিজ্যিক বিপণনে যাবে কেন্দ্রটি।

প্রকল্প পরিচালক তানভীর রহমান বলেন, ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজ শুরু করি। প্রকল্প শেষ হওয়ার মেয়াদ ছিল ৯ জুলাই, ২০২৪। আমরা নির্ধারিত সময়ের ১০ দিন আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছি। বর্তমানে রেডি অ্যাবিলিটি (প্রস্তুত ক্ষমতা) রানে রয়েছে। উৎপাদন শুরু হলে জাতীয় গ্রিডে ৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১০ দশমিক ২ ইউএস সেন্ট মূল্যে পিডিবির কাছে বিক্রি করা হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎসহ উৎপাদনক্ষমতা ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। দেশে বর্তমানে ১১টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৫৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

নতুন এই প্রকল্পটি জেলায় শিল্প কারখানা স্থাপনের পথ সুগম করবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

শুভ/শান্তা